বন‍্যাত্রাণের টাকা আত্মসাৎ : তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর

27th July 2021 11:32 am মালদা
বন‍্যাত্রাণের টাকা আত্মসাৎ : তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর


দেবাশীষ পাল ( মালদা ) :  প্রকৃত উপভোক্তারা বন্যাত্রানের টাকা পাননি।তার বদলে ঘনিষ্ঠদের একাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে তা আত্মসাত করেছেন প্রধান।গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে এভাবেই ত্রানের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পুলিশে এফআইআর করলেন বিডিও। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সোনামনি সাহার বিরুদ্ধে এফআইআর হতেই তৃণমূলের অন্দরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে এলাকায় ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যায় অনেকের আংশিক ও বহু বাসিন্দার ঘরদোর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়! এরপর রাজ্য সরকারের তরফে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৩৩০০ টাকা ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৭০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকৃত উপভোক্তাদের অনেকেই টাকা পাননি বলে তারা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। প্রকৃত দুর্গদের টাকা না দিয়ে প্রধান তার ঘনিষ্ঠদের একাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে তা আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ। এমনকি একেকজনের নামে পাঁচ থেকে ছবার করে টাকা ঢোকানো হয় বলেও অভিযোগ। প্রধান তার ঘনিষ্ঠদেরএরপরেই তদন্তে নামে প্রশাসন। এদিকে প্রশাসন অযথা তদন্তে ঢিলেমি করছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করেন কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তারপরেই রবিবার প্রধান সোনামনি সাহার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানান বিডিও। এই ঘটনা নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। মুখে না বললেও অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। শেষ পর্যন্ত বিডিওর অভিযোগের ভিত্তিতে কি ব্যবস্থা গ্রহণ হয়, তাই দেখার বিষয়।

এই প্রসঙ্গে বিডিও অনির্বান বসু বলেন, পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এবার পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।

চাঁচলের এসডিপিও শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সব খতিয়ে দেখে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, প্রশাসন প্রধানকে তিনবার শো-কজ করলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। দুর্গতদের টাকা না দিয়ে তা লুঠ করা হয়েছে।

এদিকে এদিন প্রধানকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। পঞ্চায়েতে গেলে তালা ঝুলতে দেখা যায়,বাড়িতে গেলে প্রধানের ছেলে গৌরব সাহা বলেন, বাবা-মা কেউ নেই, কোথায় গেছে জানিনা বলে যায়নি।

বড়ই পঞ্চায়েতের কংগ্রেস বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন," ২০১৭ সালে বন্যা হয়েছিল। সেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা হয়। ক্ষতিপূরণের টাকা আসে। কিন্তু যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা সেই টাকা পায়নি। দেখা যায় পঞ্চায়েত প্রধান সেই টাকা তার আত্মীয়দের একাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের বাইরে বিভিন্ন এলাকা  এমনকি ভিন রাজ্যে ঐ টাকা গেছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি যারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ তারা টাকা পাক। আর যারা দুর্নীতি করেছে তাদের শাস্তি হোক।"

 তৃণমূল জেলা কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার বলেন," মহকুমা শাসকের অধীনেই পঞ্চায়েতের প্রধানেরা কাজ করে। এক্ষেত্রে প্রধান যদি টাকা নয় ছয় করে। তাহলে বিডিওর অনেক আগেই ব্যাপারটি দেখা উচিত ছিল। এতদিন পর অভিযোগ করছে কেন?"





Others News